কার্প কোন একক মাছ নয়, বরং মাছের গ্রুপ। এই গ্রুপে আবার দুই ধরনের সদস্য আছে: দেশি ও বিদেশি। দেশি কার্পের ভিতর রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালিবাউস জনপ্রিয়। অন্যদিকে বিদেশি কার্পের ভিতর সিলভার কার্প ও গ্রাস কার্পই বেশি জনপ্রিয়। আজ আমরা এই কার্প জাতীয় মাছগুলোকে রান্না করার একটা জেনেরিক রেসিপি সম্পর্কে জানব।
উপকরণ
- ৭৫০ গ্রাম কার্প মাছ (টুকরো-টুকরো করে কাটা)
- এক চা চামচ হলুদের গুঁড়া
- দুই চা চামচ মরিচের গুঁড়া
- হাফ চা চামচ গরম মশলার গুঁড়া
- পরিমাণ মত লবণ
- পরিমাণ মত সরিষার তেল
- পরিমাণ মত পানি
- চারটা দেশি পেঁয়াজ কুঁচি
- দুইটা দেশি রসুন কুঁচি
- তিন-চারটা কাঁচা মরিচ কুঁচি
আমি সবকিছু আমার হিসেব করে বললাম। আপনি চাইলে যেকোন পরিমাণের মাছ একসাথে রান্না করতে পারেন আর হলুদ-মরিচ-লবণ-তেল খুশিমত খরচ করতে পারেন।
ডিসক্লেইমার
ধারাভাষ্যে যাওয়ার আগে ডিসক্লেইমার দেয়া দরকার। আমি একজন ব্যাচেলর, ঢাকা শহরে ঠেকায় পড়ে শুধুমাত্র প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে রান্নাবান্না শিখছি। এই রেসিপি ফলো করে বিপদে পড়লে আমার কোন দায়-দায়িত্ব নাই।
ধারাভাষ্য
প্রথমেই পানি দিয়ে মাছের টুকরোগুলোকে আচ্ছামত ধুয়ে নিন। তারপর হাফ চা চামচ হলুদের গুঁড়া ও এক চা চামচ লবণ ভাল করে মাছে মাখিয়ে নিন। এই অবস্থায় আধা ঘন্টা রেখে দিন। এতে করে মাছের ভিতর ভালমত মশলা ঢুকবে। তাছাড়া মাছের গায়ের আঁশটে গন্ধও অনেকটাই চলে যাবে। ভাল হয় যদি ফ্রাইপ্যানে হালকা সরিষার তেলে মাছগুলো ঝাপসার উপর ভাজতে পারেন। আমি সাধারণত ভেজে রান্না করতেই বেশি পছন্দ করি।
এবার তরকারির পাতিলে তিন-চার চা চামচ সরিষার তেল নিয়ে হালকা আঁচে গরম করুন। তেল গরম হলে তাতে পেঁয়াজ কুঁচি, রসুন কুঁচি, কাঁচা মরিচ কুঁচি ছেড়ে দিন। এবার আপনাকে দৌড়ের উপর থুক্কু নাড়ার উপর থাকতে হবে। না নাড়ালে পাতিলের তলায় লেগে যেতে পারে।
পেঁয়াজ বাদামি বর্ণ ধারণ করলে পাতিলে আড়াই কাপ পানি ঢেলে দিন। পানির ভিতর হাফ চা চামচ হলুদের গুঁড়া, দুই চা চামচ (বা আপনি যেমনটা খান) মরিচের গুঁড়া, হাফ চা চামচ গরম মশলার গুঁড়া, এক চা চামচ লবণ দিয়ে ভাল করে নাড়ুন। সব মিলেমিশে একাকার হয়ে গেলে ঢাকনা দিয়ে পাতিলের মুখ ঢেকে দিন। হালকা আঁছে ১০-১৫ মিনিট জ্বাল দিলেই দেখবেন মশলা উপরে উঠে এসেছে আর চমৎকার গন্ধ বের হচ্ছে। এটাই সেই মোক্ষম সময়।
এবার মশলার সমুদ্রে মাছগুলোকে ডুবিয়ে দিন। তারপর আবার ঢাকনা চড়িয়ে দিন। ১৫-২০ মিনিট পর দেখবেন মাছের চমৎকার গন্ধ বের হচ্ছে। মাখা-মাখা খেতে চাইলে এই অবস্থাতেই লবণ দিয়ে আরো কিছুক্ষণ জ্বাল দিতে পারেন। আর ঝোল করতে চাইলে অল্প একটু (হাফ কাফ) পানি দিন। লবণ ঠিক না থাকলে পরিমাণমত লবণ দিন। তারপর আরো ১০ মিনিট জ্বাল দিন। মাছ খাওয়ার উপযোগী নরম হয়ে গেলে আমাদের রান্না শেষ।
হয়ে গেল ব্যাচেলরীয় পদ্ধতিতে কার্প মাছের তরকারি।
comments powered by Disqus