আমি একজন নিবেদিতপ্রাণ আমিষভোজী। তবে খাসীর মাংসই খাই আর মাছ ভাজাই খাই, সাথে একটা ভর্তা হলে জমে ভাল। সকালে রূপচাঁদা ফ্রাই করছিলাম। ভাবলাম একটা ভর্তা করা যাক। ফ্রীজেই দুটো পেটমোটা বেগুন ছিল। ও দুটোকেই খেলে দিলাম আজকে। কথায় আছে, বেগুনের অনেক গুণ। কথাটা আসলেই সত্য। জগৎ সংসারে আলু ভর্তার পর বেগুন ভর্তা বানানোই ব্যাচেলরদের জন্য বোধহয় সবচেয়ে সহজ। আর স্বাদ? আহা, মরি মরি!

উপকরণ Link to heading

  • দুটো মাঝারি সাইজের পেটমোটা বেগুন
  • চারটে শুকনা মরিচ
  • চারটে ধনিয়া পাতা
  • দেশি পেঁয়াজ চারটে (ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ মনে হয় একটাই যথেষ্ট)
  • দেড় চা চামচ লবণ
  • আড়াই চা চামচ সরিষার তেল (আমি তেল খুব কম খাই)
  • একটা ফ্রাই প্যান
  • একটা খুন্তি
  • একটা বাটি বা প্লেট

আমি সবকিছু আমার হিসেব করে বললাম। আপনি চাইলে একটা-দুইটা-পাঁচটা বেগুনের ভর্তা একসাথে করতে পারেন আর লবণ-মরিচ-পেঁয়াজ-তেল খুশিমত খরচ করতে পারেন।

ডিসক্লেইমার Link to heading

ধারাভাষ্যে যাওয়ার আগে ডিসক্লেইমার দেয়া দরকার। আমি একজন ব্যাচেলর, ঢাকা শহরে ঠেকায় পড়ে রান্নাবান্না শিখছি। এই রেসিপি ফলো করে বিপদে পড়লে আমার কোন দায়-দায়িত্ব নাই।

ধারাভাষ্য Link to heading

প্রথমেই বেগুনের বোঁটাগুলো টেনে-হিঁচড়ে উপড়ে ফেলুন। অল্প একটু সরিষার তেল নিয়ে ভাল করে বেগুনের গায়ে মাখুন। এবার খুন্তির ধরার অংশটা ক্যাচ করে বেগুনের উপড়ানো অংশ দিয়ে ঢুকিয়ে দিন। এমনভাবে ঢুকিয়ে দিন যেন বেগুনের অর্ধেকটা অবধি খুন্তির হাতল পৌঁছে যায়। এবার গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে উল্টে-পাল্টে পুড়তে থাকুন। কতক্ষণ পুড়বেন? যতক্ষণ না বেগুনের ভেতরটা নরম হয়ে খুন্তি বেগুন থেকে আলগোছে বের হয়ে যেতে চায়। এই অবসরে গাইতে পারেন খান আতাউর রহমান স্যারের সুর করা সেই বিখ্যাত গান -

আমাকে পোড়াতে যদি এতো লাগে ভালোজ্বালো আগুন আরো জ্বালো, ঢালো আরো ব্যথা ঢালোআমাকে পোড়াতে যদি এতো লাগে ভালো।

বেগুন পোড়া হয়ে গেলে ঠান্ডা হওয়ার জন্য রেখে দিন। এবার পেঁয়াজ ও ধনিয়া পাতা কুচিকুচি করে কেটে নিন। তারপর ফ্রাইপ্যানে এক চা চামচ সরিষার তেল ঢেলে নিয়ে অল্প আঁচে শুকনা মরিচ গুলো ভেজে নিন। খেয়াল রাখুন, ভাজা মরিচ যেন মচমচে হয়। আর অবশ্যই ভাজার আগে মরিচের বোঁটা ফেলে দিতে হবে। যাহোক, মরিচ ভাজা হয়ে গেলে ফ্রাইপ্যানে পেঁয়াজ ও ধনিয়া পাতা কুচি অল্প করে ভেজে নিন। অল্প একটু লবণও দিতে পারেন। তাতে আশা করি কেউ রাগ করবে না।

এতক্ষণে বেগুন ঠান্তা হয়ে যাওয়ার কথা। বেগুনের গা থেকে খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে ওদেরকে অসহায় বানিয়ে দিন। একটা বাটিতে লবণ, ভাজা পেঁয়াজ ও ধনিয়া পাতা কুচি এবং শুকনা মরিচ নিয়ে ভাল করে পিষুন। পিষে পিষে একেবারে বাপের নাম ভুলিয়ে দিন। বাপের নাম ভুলে গেলে বেগুন চটকাতে শুরু করুন। চটকানো হয়ে গেলে সবকিছু একসাথে মিশিয়ে তালগোল পাকিয়ে ভর্তা বানিয়ে ফেলুন।

হয়ে গেল ব্যাচেলরীয় পদ্ধতিতে বেগুন ভর্তা।