একদিন একজন মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ‘স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট প্রিন্সিপল’ পড়াচ্ছিলেন। ছাত্র-ছাত্রীতে পরিপূর্ণ অডিটোরিয়ামের মঞ্চে উঠে তিনি একটা পানির গ্লাস উঁচু করে ধরলেন। সবাই ভাবল, অধ্যাপক তাদেরকে চিরাচরিত “গ্লাস অর্ধেক খালি নাকি ভর্তি” প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করবেন। কিন্তু অধ্যাপক হাসিমুখে জিজ্ঞেস করলেন, “আমি যে পানির গ্লাসটা ধরে আছি এটার ওজন কত হবে?”

ছাত্র-ছাত্রীরা চিৎকার করে উত্তর দিল, আট আউন্স থেকে কয়েক পাউন্ড হতে পারে।

অধ্যাপক উত্তর দিলেন, “আমার পরিপ্রেক্ষিতে, এই গ্লাসের সঠিক ওজন কোন ব্যাপার না।বরং আমি কতক্ষণ এটা ধরে আছি তার উপর নির্ভর করে। যদি আমি এটাকে এক বা দুই মিনিটের জন্য ধরে থাকি, তাহলে এটা মোটামুটি হালকা। যদি আমি এটাকে এক ঘন্টার জন্য ধরে রাখি, তবে এটার ওজনে আমার হাতে সামান্য ব্যথা হতে পারে। যদি আমি এটাকে একদিনের জন্য ধরে রাখি, তাহলে সম্ভবত আমার হাতে খিল ধরে যাবে, অসাড় এবং পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যাব, ফলে গ্লাসটা ফ্লোরে পড়ে যাবে। প্রতিটি ক্ষেত্রে, গ্লাসের ওজনে কোন পরিবর্তন হচ্ছে না, কিন্তু যত দীর্ঘ সময় আমি এটাকে ধরে রাখব, আমার কাছে এটা তত ভারী মনে হবে।”

ছাত্র-ছাত্রীরা মাথা নেড়ে সম্মতি জানাল। অধ্যাপক বলে চললেন,“তোমাদের জীবনের ধকল ও উদ্বেগও অনেকটা এই পানির গ্লাসের মত। কিছুক্ষণের জন্য এগুলো নিয়ে চিন্তা কর, কিছুই হবে না। এগুলো নিয়ে একটু একটু চিন্তা কর, তোমাদের একটু একটু যন্ত্রণা হওয়া শুরু করবে। সারা দিন এগুলো নিয়ে চিন্তা কর, তোমরা একেবারে অসাড় ও পক্ষাঘাতগ্রস্থ হয়ে যাবে - যতক্ষণ না মাথা থেকে এগুলো ঝেড়ে ফেলবে ততক্ষণ কিছুই করতে পারবে না।”

সারকথা: এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, জীবনের সকল ধকল ও উদ্বেগ ঝেড়ে ফেলা উচিত। সারাদিনে কি কি হয়েছে এটা কোন গুরুত্ব বহন করে না, সন্ধ্যা হওয়ার সাথে সাথে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, মাথা থেকে দুশ্চিন্তার বোঝা ফেলা দেয়া উচিত। সারারাত এবং পরের দিনে এটাকে বয়ে বেড়িও না। আজকে যদি তুমি গতকালের ধকল কাটিয়ে উঠতে না পার, তবে এখনই সময় - সব ঝেড়ে ফেল।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: প্রচলিত বিদেশি ভাষার গল্প থেকে অনুদিত।